ইসরাফিল শেখ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
এনজিও থেকে টাকা তুলে না দেওয়ায় আপন খালা শাশুড়ির কাছে ৯ লাখ টাকা দাবি ও এর প্রেক্ষিতে লাঞ্ছিত করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে হাফিজা খাতুন নামের এক নারী ও তার ভাই রানার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী জাহানারা খাতুন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের রতনকান্দী উত্তরপাড়া গ্রামের টং দোকানী মোঃ সোবাহান আলীর স্ত্রী। স্থানীয় নগরডালা বাজারে তার ছোট একটি টং দোকান রয়েছে, এবং রাতে ওই বাজারেই নৈশপ্রহরীর কাজ করেন।
অভিযুক্ত হাফিজা খাতুন পৌর শহরের কান্দাপাড়া গ্রামের সিএনজি চালক মোঃ জমিনের স্ত্রী ও তার ভাই রানা রতনকান্দী উত্তরপাড়া গ্রামের শুকুর সরকারের ছেলে। সে শাহজাদপুর চৌকি আদালতে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
সরেজমিনে রতনকান্দি গ্রামে জাহানারা খাতুনের বাড়িতে গেলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন পূর্বে আমার ভাগিনার স্ত্রী হাফিজা খাতুন আমাকে এনজিও থেকে টাকা তুলে দিতে বললে তিনি অস্বীকার করেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছুদিন পর আমার কাছে ৮ লক্ষ টাকা পাওয়ার দাবি করে।
এই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। পরে হাফিজা খাতুন, তার স্বামী জমিন ও ভাই রানা আমার স্বামী সোবাহান আলীর দোকানে গিয়ে টাকা দাবি করে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। পরে এলাকার লোকজন বিষয়টি নিয়ে শালিস বৈঠকের কথা বললে তারা চলে যায়।
পরদিন রতনকান্দী গ্রামে অনুষ্ঠিত শালিসে দাবিকৃত পাওনা টাকার বিষয়ে তারা কোন সাক্ষী প্রমাণ দেখাতে না পেরে শালিস অমান্য করে স্থান ত্যাগ করেন।
হাফিজা খাতুন আরও বলেন, আমার বড় ছেলেকে ইতিপূর্বে জেলে প্রেরণ করা এবং পরবর্তীতে জামিন নেওয়ার প্রয়োজনে রানা আমার কাছ থেকে কিছু কাগজে স্বাক্ষর নেয়। এবং সে হুমকি দিয়েছে যে ১৫ লাখ টাকা না দিলে মামলা দিবেন।
এই বিষয়ে জানতে হাফিজা খাতুনের বাড়িতে গেলে তার স্বামী প্রথমে কিছু জানেনা বলে জানান। এসময় হাফিজা খাতুনের জাঁ বলেন মাঝে মাঝে জমিনের খালা জাহানারা খাতুনকে টাকা নিয়ে যেতে আমরা দেখেছি।
পরে জমিনের শ্যালক রানা সেখানে উপস্থিত হলে কথা বলতে রাজি হন হাফিজা খাতুন ও তার স্বামী কথা বলতে রাজি হন। এসময় তারা বলেন, তার খালা জাহানারা খাতুন বিদেশে পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকে গত বছরের নভেম্বর মাসে বাড়িতে এসে ৯ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এবং তাদের সাক্ষরসহ স্ট্যাম্প আছে বলে তারা জানান।
এই ঘটনায় হাফিজা খাতুনের ভাই রানাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, সকল ডকুমেন্ট তাদের কাছে আছে, এই বিষয়ে আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পরে শালিসে অংশ নেয়া রতনকান্দী উত্তরপাড়ার মোঃ রহমাতুল্লাহ, শাহজাহান আলী ও আব্দুস সালাম বলেন, বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রশমন করতে আমরা তাদের শালিসের কথা বললে উভয়পক্ষ তাতে রাজি হন। পরদিন শুক্রবার শালিসে উভয়পক্ষের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হাফিজা খাতুন পক্ষকে প্রামণ প্রদর্শন করতে বললে তারা ব্যর্থ হয়। পরে তারা শালিস না মেনে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ এখলাছুর রহমান বলেন, জাহানারা খাতুনের অভিযোগ পেয়ে আমরা টাকা লেনদেনের কোন প্রমাণ পাইনি। তবে পূর্বের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে রানার কাছে তাদের সাক্ষর রয়েছে, যদি সে চেষ্টা করে তাহলে সেই সাক্ষর দিয়ে কিছু একটা করতে পারে।