মেহেরপুর প্রতিনিধি (১৭.১২.২৪)
মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যল স্কুল এন্ড কলেজের ড্রেসমেকিং ট্রেডের ইন্সট্রাকটর মনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দশম শ্রেনীর ছাত্রীদের যৌন নিপিড়নের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষর কাছে গত ২০ দিন আগে লিখিত অভিযোগ করে কোন বিচার না পেয়ে শিক্ষাথীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রেখেছে। অধ্যক্ষ বিষয়টি স্বিকার করে বলেন শতশত মেয়ের মধ্যে দুই এক জনের গাযে হাত লাগতেই পারে।
দশম শ্রেনীর ছাত্রী সাইমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ড্রেসমেকিং ট্রেডের ইন্সট্রাকটর (শিক্ষক) মনারুল ইসলাম আমাদের সাথে অশ্লিল ব্যবহার করেন। আমাদের খারাপ খারাপ ইঙ্গিত দেন। আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে উদ্দেশ্যপ্রণদিত ভাবে হাত দেন, খারাপ নজরে তাকান। আমাদের মাল বলে ডাকেন। আমাদের ব্যবহারিক ক্লাসে স্যার আমাদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে আমাদের সেখানে তাকাতে বাধ্য করে।
অপর ছাত্রী জ্যোতি বলেন, আমরা বিষয়টি একাধিকবার মৌখক ভাবে আমাদের বিভিন্ন স্যার ও অধ্যক্ষকে জানিয়েছি। কোন প্রতিকার না পেয়ে গত ২৫ নভেম্বর অধ্যক্ষ বরাবর আমরা লিখিত অভিযোগ প্রদান করি। স্যার আমাদের তিন দিনের মধ্যে এর সমস্যার সমাধান করে দেবেন বলে আশ^াস দেন। উনি তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তবে সে তদন্ত কমিটি ২০ দিনেও কোন প্রতিবেদন দেয়নি, আমরা কোন প্রতিকার পাইনি। উল্টো আমাদের এখন বিভিন্ন ভয় ভীতিসহ শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেবার কথা বলছেন অধ্যক্ষ। বর্তমানে আমাদের শিক্ষকদের দিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির উপর আমাদের কোন আস্থা নেই। আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষি ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনবেন। সেই সাথে আমাদের নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দেবে।
ফালগুনী রহমান বলে, নিরব এ নির্যাতনের শিকার আমরা প্রতিটি ছাত্রীই। পিতৃতুল্য শিক্ষকদের কাছে আমরা আনিরাপদ। এমন শিক্ষকের কাছে আমরা শিক্ষা নিতে চাইনা । আমরা বিষয়টি শেষ পযন্ত আজকে সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সিও ও চিফ ইন্সট্রাকটর ( ফার্ম মেশিনারী) মো: শফি উদ্দিন বলেন, এখানে তেমন কিছুই হয়নি। তবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আমরা উদ্ধতন কর্তৃপক্ষর সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।
তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির আহবায়ক গনিত বিভাগের ইন্সট্রাক্টর আলফাজ উদ্দিন বলে, শিক্ষার্থীদেও গায়ে হাত দেবার অভিযোগের বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সময় মতো প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠানে শত শত মেয়ে পড়ে। দুই একজন মেয়ের গায়ে হাত পড়তেই পারে। মেয়েদের অভিযোগের বিষয়ে আমি বলতে বাধ্য নয়।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ও মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি সিফাত মেহেনাজ বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে কোন অভিযোগ আমার দপ্তরে জমা পড়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।