টঙ্গী থেকে মোঃ শাহজালাল দেওয়ান:
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা পান্ডেল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠ ও প্যান্ডেল প্রস্তুতির কাজে গাজীপুর, উত্তরা, তুরাগ, কামারপাড়া, আশুলিয়া, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র, মসজিদের মুসল্লি ও তাবলীগের সাথীরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি ৫৮ তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরায়ে নেজামের অধীনে এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থিদের অধীনে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
রবিবারের ইজতেমা ময়দান সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ইজতেমাকে ঘিরে চলছে সবধরনের প্রস্তুতি কাজ। মাদ্রাসার ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে ময়দানের কাজ করছেন। প্যান্ডেল তৈরির কাজ ছাড়াও রাস্তা মেরামত, মাইক টানানো, টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কেউ কেউ ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, পুরনো ড্রেন সংস্কার, বাঁশের খুঁটি পোতা, পাটের চট দিয়ে সামিয়ানা তৈরি, ময়দানের চারপাশের স্থাপিত অযু-গোসলের চৌবাচ্চা, টয়লেটগুলো সংস্কারের কাজ ও ময়দানের আগাছা পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন মুসল্লিরা । টঙ্গীর দারুল উলুম মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান ২৫০ জন ছাত্র নিয়ে আমরা এখানে মাঠে এসেছি মাঠ প্রস্তুত কাজের জন্য এসেছি । এই ময়দানে আল্লাহর মেহমানরা ইবাদত বন্দেগি করতে আসবেন। তারা যেন সুন্দরভাবে ইবাদত বন্দেগি করতে পারেন সেই দিক খেয়াল রেখে ময়দানের কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সার্থক করতে এরইমধ্যে চলছে নানা প্রস্তুতিমূলক কাজ। সারা বিশ্ব থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিগণ ইজতেমায় এসে যাতে কোন ধরণের মুসকিলে না পড়েন, সেজন্যে মাঠ ভরাট, টিনশেডের বিদেশি নিবাস তৈরি, পর্যাপ্ত পানি ও বিদ্যুত সরবরাহসহ আনুসঙ্গিক অনেক কাজ করা হচ্ছে।
গত ১৭ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ বিভাগীয় কমিশনার ঢাকার নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দিবেন। আর দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উক্ত কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নিবেন এবং ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন। এছাড়াও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয় বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে তাবলিগ জামাতের পুরানো সাথীদের নিয়ে ২৮ নভেম্বর জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ২ ডিসেম্বর বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে জোড় ইজতেমা। এরপর আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে দীনের মেহনতকে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে সাথীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বেন। দুই পর্বের ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করতে উভয় পক্ষের আয়োজকদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন হবে এমনটাই আশা করা হচ্ছে।